
পাবনা সদর হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর পর ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে। সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। পুরো ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত আছে।
জানা যায়, সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাশের হাসান (৪৫) নামের এক ব্যক্তি ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্বজনরা চিকিৎসকের খোঁজে ছোটাছুটি শুরু করেন। এ সময় নাইট ডিউটিতে থাকা ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক দ্রুত দোতলায় গিয়ে রোগীকে দেখতে শুরু করেন।
চিকিৎসা চলাকালে রোগীর এক আত্মীয় চিকিৎসকের ভিডিও ধারণ করছিলেন। চিকিৎসক তাকে ভিডিও করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করলে এবং ফোনটি সরাতে গেলে সেটি মেঝেতে পড়ে যায়। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন এবং তাকে ধাক্কা দিয়ে মারধর শুরু করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে চিকিৎসক পাশের ওয়ার্ডে আশ্রয় নিলেও সেখান থেকে তাকে টেনে বের করে আবারও মারধর করা হয়।
এই ঘটনার কিছু সময় পর রোগী মারা যান। রোগীর স্বজনরা তখন লাশ হস্তান্তরে বিলম্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ফের হট্টগোল শুরু করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হামলার কারণে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারেননি, যার ফলে লাশ হস্তান্তরে কিছুটা দেরি হয়।
ঘটনার পর হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য চিকিৎসক ও নার্সরা ছুটে আসেন। পরে পুলিশ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. জাহিদ বলেন, “রোগীর অবস্থা শুনেই ইন্টার্ন চিকিৎসক দ্রুত ছুটে গিয়েছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজে পুরো ঘটনা স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।”
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, “দুই পক্ষই আমাদের বিষয়টি জানিয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”