০৭:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাঁশখালীর কৃতি সন্তান কিংবদন্তি হাফেজ আলহাজ্ব মাওলানা তৈয়বের ইন্তেকাল

চট্টগ্রাম বাঁশখালীর পৌরসভা ১নং ওয়ার্ড  ভাদালিয়ার কৃতি সন্তান, শায়খুল হুফফাজ আলহাজ মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়ব চট্টগ্রামের সি এসসি আর হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত  মুহিউসসুন্নাহ মাদরাসার পরিচালক,  সেগুনবাগান তালিমুল কুরআন কমপ্লেক্স এর প্রতিষ্ঠাতা, চট্টগ্রাম প্রাইভেট মাদরাসা সংস্থার সভাপতি, হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব সহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের গুরু দায়িত্বে ছিলেন। উল্লেখ্য যে, তিনি ১৯৬১ সালের ৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বাঁশখালী থানার ভাদালিয়া গ্রামে এক ধর্মপরায়ণ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। বাল্যকালে পিতৃহারা হয়ে জীবন শুরু করেন সংগ্রাম আর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। প্রাথমিক শিক্ষা নিজ গ্রামে, পরে পাহাড়তলী মুহাম্মদীয়া মাদরাসা ও নাজিরহাট বড় মাদরাসায় শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করেন। দারিদ্র্য ও কষ্ট তাঁকে কখনো থামাতে পারেনি, বরং আরও উজ্জ্বল করেছে তাঁর জীবনপথ।শিক্ষকতা শুরু করেন পাহাড়তলী মুহাম্মদীয়া মাদরাসায়, পরে রাউজানের মদুনাঘাট ইউনুছিয়া ও নাজিরহাট বড় মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। এরপর নিজেই গড়ে তুলেন চট্টগ্রামের সুপরিচিত সেগুনবাগান  তালিমুল কুরআন কমপ্লেক্সসহ অসংখ্য দ্বীনি প্রতিষ্ঠান।হাফেজ ও আলেম-তৈরির পাশাপাশি তিনি সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখেন। একজন দূরদর্শী চিন্তাবিদ ও সংগঠক হিসেবেও আলেম সমাজের কাছে খ্যাতি লাভ করেন।নিজের সম্পদ, সময়, শ্রম সবই তিনি ব্যয় করেছেন দ্বীনের খেদমতে। তাঁর নিজের নামে কোনো সম্পদ ছিল না—সবই ছিল মাদরাসা, মসজিদ ও ছাত্রদের জন্য উৎসর্গীকৃত।তিনি প্রতিষ্ঠা করেন চট্টগ্রাম ও অন্যান্য জেলায় তালিমুল কুরআন কমপ্লেক্সের একাধিক শাখা। পাশাপাশি গড়ে তোলেন প্রাইভেট মাদরাসা এসোসিয়েশন, ইমাম ও খতীব ফাউন্ডেশন, আন্তর্জাতিক হাফেজে কুরআন সংস্থা, যাকাত ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন। এসবের মাধ্যমে তিনি দেশব্যাপী আলেম গড়ার পাশাপাশি সমাজ উন্নয়ন, মাদক ও জঙ্গিবাদবিরোধী সচেতনতা, রোহিঙ্গা ত্রাণ, নওমুসলিম পুনর্বাসন, দাওয়াতি কার্যক্রমে অসামান্য ভূমিকা রাখেন।তাঁর উদ্যোগে প্রতিবছর হজযাত্রী সংবর্ধনা, মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, সামাজিক সম্মাননা, হারাম শরীফে বাংলা ভাষার প্রচলন, দুঃস্থদের পুনর্বাসন, এবং আলেমদের ঐক্যের জন্য সম্মেলনের আয়োজন করা হতো। এছাড়াও কাতারে ইমাম-মুয়াজ্জিন নিয়োগ, মসজিদে সমস্যার সমাধানে পুস্তক রচনা, মিডিয়ায় ইসলাম প্রচারে ‘বাংলাদেশ কওমি বার্তা’ প্রকাশসহ বহুমাত্রিক অবদান রেখে গেছেন।মাওলানা তৈয়ব সাহেব ছিলেন একাধারে হাফেজ,  আলেম, শিক্ষাবিদ, সংগঠক ও সমাজসেবক। তাঁর ইন্তেকাল খবরে বাঁশখালীসহ চট্টগ্রামের আলেম সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ শোকাবহ হতে মরহুমের মাগফিরাত কামনা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

‎ব্রাহ্মণপাড়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ

বাঁশখালীর কৃতি সন্তান কিংবদন্তি হাফেজ আলহাজ্ব মাওলানা তৈয়বের ইন্তেকাল

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:২৩:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রাম বাঁশখালীর পৌরসভা ১নং ওয়ার্ড  ভাদালিয়ার কৃতি সন্তান, শায়খুল হুফফাজ আলহাজ মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়ব চট্টগ্রামের সি এসসি আর হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত  মুহিউসসুন্নাহ মাদরাসার পরিচালক,  সেগুনবাগান তালিমুল কুরআন কমপ্লেক্স এর প্রতিষ্ঠাতা, চট্টগ্রাম প্রাইভেট মাদরাসা সংস্থার সভাপতি, হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব সহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের গুরু দায়িত্বে ছিলেন। উল্লেখ্য যে, তিনি ১৯৬১ সালের ৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বাঁশখালী থানার ভাদালিয়া গ্রামে এক ধর্মপরায়ণ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। বাল্যকালে পিতৃহারা হয়ে জীবন শুরু করেন সংগ্রাম আর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। প্রাথমিক শিক্ষা নিজ গ্রামে, পরে পাহাড়তলী মুহাম্মদীয়া মাদরাসা ও নাজিরহাট বড় মাদরাসায় শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করেন। দারিদ্র্য ও কষ্ট তাঁকে কখনো থামাতে পারেনি, বরং আরও উজ্জ্বল করেছে তাঁর জীবনপথ।শিক্ষকতা শুরু করেন পাহাড়তলী মুহাম্মদীয়া মাদরাসায়, পরে রাউজানের মদুনাঘাট ইউনুছিয়া ও নাজিরহাট বড় মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। এরপর নিজেই গড়ে তুলেন চট্টগ্রামের সুপরিচিত সেগুনবাগান  তালিমুল কুরআন কমপ্লেক্সসহ অসংখ্য দ্বীনি প্রতিষ্ঠান।হাফেজ ও আলেম-তৈরির পাশাপাশি তিনি সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখেন। একজন দূরদর্শী চিন্তাবিদ ও সংগঠক হিসেবেও আলেম সমাজের কাছে খ্যাতি লাভ করেন।নিজের সম্পদ, সময়, শ্রম সবই তিনি ব্যয় করেছেন দ্বীনের খেদমতে। তাঁর নিজের নামে কোনো সম্পদ ছিল না—সবই ছিল মাদরাসা, মসজিদ ও ছাত্রদের জন্য উৎসর্গীকৃত।তিনি প্রতিষ্ঠা করেন চট্টগ্রাম ও অন্যান্য জেলায় তালিমুল কুরআন কমপ্লেক্সের একাধিক শাখা। পাশাপাশি গড়ে তোলেন প্রাইভেট মাদরাসা এসোসিয়েশন, ইমাম ও খতীব ফাউন্ডেশন, আন্তর্জাতিক হাফেজে কুরআন সংস্থা, যাকাত ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন। এসবের মাধ্যমে তিনি দেশব্যাপী আলেম গড়ার পাশাপাশি সমাজ উন্নয়ন, মাদক ও জঙ্গিবাদবিরোধী সচেতনতা, রোহিঙ্গা ত্রাণ, নওমুসলিম পুনর্বাসন, দাওয়াতি কার্যক্রমে অসামান্য ভূমিকা রাখেন।তাঁর উদ্যোগে প্রতিবছর হজযাত্রী সংবর্ধনা, মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, সামাজিক সম্মাননা, হারাম শরীফে বাংলা ভাষার প্রচলন, দুঃস্থদের পুনর্বাসন, এবং আলেমদের ঐক্যের জন্য সম্মেলনের আয়োজন করা হতো। এছাড়াও কাতারে ইমাম-মুয়াজ্জিন নিয়োগ, মসজিদে সমস্যার সমাধানে পুস্তক রচনা, মিডিয়ায় ইসলাম প্রচারে ‘বাংলাদেশ কওমি বার্তা’ প্রকাশসহ বহুমাত্রিক অবদান রেখে গেছেন।মাওলানা তৈয়ব সাহেব ছিলেন একাধারে হাফেজ,  আলেম, শিক্ষাবিদ, সংগঠক ও সমাজসেবক। তাঁর ইন্তেকাল খবরে বাঁশখালীসহ চট্টগ্রামের আলেম সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ শোকাবহ হতে মরহুমের মাগফিরাত কামনা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।