
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিনসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৮৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এ মামলা দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে নথিভুক্ত হয়।
মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক মো. বুলু মিয়া। অভিযোগ দায়েরের সময় তিনি উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে মোট ৬০৩ টন জিআর (গার্ড রিলিফ) চাল আত্মসাৎ করেন, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী অভিযুক্তরা হলেন:
> সাবেক এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান (তুহিন)
> সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মালেক চৌধুরী স্বপন
> তৎকালীন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এ বি এম সিরাজুল হক
> খারুয়া ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আবুল খায়ের
> আচারগাঁও ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু
> জাহাঙ্গীরপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল (ওয়ানিছ)
> চণ্ডীপাশা ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান এমদাদুল হক ভূঁইয়া
> সিংরইল ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম
> মোয়াজ্জেমপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আবুল খায়ের (বাবুল)
> শেরপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া (মিল্টন)
> মুসুল্লী ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান ইফতিকার উদ্দিন ভূঁইয়া (বিপ্লব)
> গাঙ্গাইল ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ আশরাফুজ্জামান খোকন
> নান্দাইল ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন (কাজল) এবং
> বেতাগৈর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন সরকার।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া প্রকল্প তৈরি করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এসব প্রকল্পের নামে সরকারি ত্রাণ চাল আত্মসাৎ করে তাঁরা রাষ্ট্রীয় অর্থ ক্ষতির সম্মুখীন করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধান ২০১৭ সালে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয়। পরে দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে দুর্নীতির সত্যতা মেলায় গত ১০ জুলাই দুদক প্রধান কার্যালয় মামলার অনুমোদন দেয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী বুলু মিয়া বলেন, “দুর্নীতির এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় নান্দাইলসহ গোটা ময়মনসিংহ অঞ্চলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। সেইসাথে অনেকেই মনে করছেন, রাজনৈতিক পরিচয়ের জোরে এতদিন এ ধরনের ঘটনা চাপা পড়ে ছিল। তবে এখন দুদকের মামলার খবরে স্বস্তির পাশাপাশি একটি প্রশ্নও সামনে এসেছে—
“এই বিচার কি আদৌ শেষ হবে…?
নাকি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চাপা পড়ে যাবে…?”