০৬:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এআই দিয়ে রাজনৈতিক প্রচারণার ভিডিও বানাচ্ছে কারা, শঙ্কা কোথায়

  • আয়নাল হক
  • পোস্ট হয়েছেঃ ১১:১৮:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
  • 10
ডেস্কের সামনে মাইক হাতে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষক মাহরীন চৌধুরী, কিছুদিন আগে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক মাধ্যমে। আর তা শেয়ার করতে দেখা গেছে অনেককে, যাদের মধ্যে ছিলেন আইনবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের মতো ব্যক্তিও। তবে ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে পরবর্তী সময়ে তা সরিয়েও ফেলেন তিনি। দেখতে ও শুনতে অনেকটাই বাস্তবের মতো হওয়ায় অনেকের জন্যেই এই ধরনের ভিডিওগুলো শনাক্ত করা কঠিন। আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে অনেকে, যাদের মধ্যে আছে রাজনৈতিক দলগুলোও। নির্বাচনের সময় ঘোষণার আগেই নিজ দলের প্রচারণা এবং অন্য দল ও দলের নেতাদের হেয় করতে তৈরি করা হচ্ছে নানা ধরনের এআই ভিডিও। তারপর ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। এমন ৭০টি রাজনৈতিক ভিডিও বিশ্লেষণ করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণায় দেখা গেছে, জামায়াতে ইসলামীর সমর্থকরা সর্বপ্রথম এ ধরনের প্রচারণা শুরু করে। পরে তাতে যোগ দেয় অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও। এসব ভিডিও তৈরি করতে সময় যেমন কম লাগে, তেমনি নির্বাচনি প্রচারণায় বরাদ্দের তুলনায় খরচও হয় খুবই সামান্য। সে তুলনায় এগুলোর প্রভাব ও বিস্তৃতি অনেক বেশি।
তবে বাংলাদেশে যেভাবে এআই ভিডিওর বিকাশ ঘটেছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শেখানো যায়নি এসব মাধ্যমের ব্যবহার। তার ওপর যদি নির্বাচনি এজেন্ডা ঠিক করে, এভাবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় তবে তা সামাল দেয়া কঠিন হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা। কীভাবে বানানো হয় এসব ভিডিও সিঁদুর পরা এক নারী কিংবা রিকশার ওপর বসে থাকা দাঁড়িওয়ালা একজন চালক কোনো একটি দলের পক্ষে ভোট চাইছেন- সামাজিক মাধ্যমে এমন কিছু ভিডিও নিশ্চয়ই চোখে পড়েছে? খেয়াল করলে দেখবেন এই ধরনের প্রায় সব ভিডিওর দৈর্ঘ্যই হয় সর্বোচ্চ আট সেকেন্ডের। কারণ এসব ভিডিওর প্রায় সবই তৈরি করা হয়েছে গুগলের ভিও টুল দিয়ে। এই টুলস লিখে কিংবা বলে দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করতে পারে দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যে। এআই বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়া প্ল্যাটফর্ম লার্নিং বাংলাদেশের ইন্সট্রাক্টর সাব্বির আহমেদ জানান, দিন যাওয়ার সাথে সাথে এআই দিয়ে নির্মিত ভিডিওগুলো এতটাই বাস্তব হয়ে উঠছে যে অভিজ্ঞ চোখেও অনেক সময় তা ধরা কঠিন হয়ে উঠছে। আপনি যদি ভিডিওর জন্য ভালোভাবে প্রম্পট (নির্দেশনা) দেন তাহলে সেই ভিডিওর ক্যারেক্টার, তার চেহারার গঠন, কী পরে আছে, ভিডিওতে কতজন মানুষ আছে- তারা কোন ক্লাসের, তাদের হাতে কী আছে- তারা গুলশান না গ্রামে আছে এসবই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আর এসব করতে প্রয়োজন হয় না খুব একটা অভিজ্ঞতা কিংবা দামি ডিভাইস। আগে যেমন কোনো ভিডিও বানাতে দামি ডিভাইস লাগতো, সেখানে এখন এক স্মার্টফোনে দিয়েই বানানো যাচ্ছে এমন সব ভিডিও। খরচও হয় খুবই সামান্য। মাত্র হাজার দুয়েক টাকায় কেনা যায় হাজার ক্রেডিট, যা দিয়ে বানানো যায় ৫০টি ভিডিও। কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করলে বিনামূল্যেই এসব টুলসে এক্সেস করা যায়। ইন্সট্রাক্টর সাব্বির আহমেদ একই টুল দিয়ে একটি ভিডিও বানিয়ে দেখান। নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, বাঁশ মার্কা চাই, মগেরগঞ্জ এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমরা বাঁশ মার্কার পাশেই আছি।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে নিহত শহিদদের স্মরণে – সিরাজগঞ্জে সাইদুর রহমান বাচ্চু’র বৃক্ষ রোপণ

এআই দিয়ে রাজনৈতিক প্রচারণার ভিডিও বানাচ্ছে কারা, শঙ্কা কোথায়

পোস্ট হয়েছেঃ ১১:১৮:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
ডেস্কের সামনে মাইক হাতে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষক মাহরীন চৌধুরী, কিছুদিন আগে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক মাধ্যমে। আর তা শেয়ার করতে দেখা গেছে অনেককে, যাদের মধ্যে ছিলেন আইনবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের মতো ব্যক্তিও। তবে ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে পরবর্তী সময়ে তা সরিয়েও ফেলেন তিনি। দেখতে ও শুনতে অনেকটাই বাস্তবের মতো হওয়ায় অনেকের জন্যেই এই ধরনের ভিডিওগুলো শনাক্ত করা কঠিন। আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে অনেকে, যাদের মধ্যে আছে রাজনৈতিক দলগুলোও। নির্বাচনের সময় ঘোষণার আগেই নিজ দলের প্রচারণা এবং অন্য দল ও দলের নেতাদের হেয় করতে তৈরি করা হচ্ছে নানা ধরনের এআই ভিডিও। তারপর ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। এমন ৭০টি রাজনৈতিক ভিডিও বিশ্লেষণ করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণায় দেখা গেছে, জামায়াতে ইসলামীর সমর্থকরা সর্বপ্রথম এ ধরনের প্রচারণা শুরু করে। পরে তাতে যোগ দেয় অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও। এসব ভিডিও তৈরি করতে সময় যেমন কম লাগে, তেমনি নির্বাচনি প্রচারণায় বরাদ্দের তুলনায় খরচও হয় খুবই সামান্য। সে তুলনায় এগুলোর প্রভাব ও বিস্তৃতি অনেক বেশি।
তবে বাংলাদেশে যেভাবে এআই ভিডিওর বিকাশ ঘটেছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শেখানো যায়নি এসব মাধ্যমের ব্যবহার। তার ওপর যদি নির্বাচনি এজেন্ডা ঠিক করে, এভাবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় তবে তা সামাল দেয়া কঠিন হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা। কীভাবে বানানো হয় এসব ভিডিও সিঁদুর পরা এক নারী কিংবা রিকশার ওপর বসে থাকা দাঁড়িওয়ালা একজন চালক কোনো একটি দলের পক্ষে ভোট চাইছেন- সামাজিক মাধ্যমে এমন কিছু ভিডিও নিশ্চয়ই চোখে পড়েছে? খেয়াল করলে দেখবেন এই ধরনের প্রায় সব ভিডিওর দৈর্ঘ্যই হয় সর্বোচ্চ আট সেকেন্ডের। কারণ এসব ভিডিওর প্রায় সবই তৈরি করা হয়েছে গুগলের ভিও টুল দিয়ে। এই টুলস লিখে কিংবা বলে দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করতে পারে দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যে। এআই বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়া প্ল্যাটফর্ম লার্নিং বাংলাদেশের ইন্সট্রাক্টর সাব্বির আহমেদ জানান, দিন যাওয়ার সাথে সাথে এআই দিয়ে নির্মিত ভিডিওগুলো এতটাই বাস্তব হয়ে উঠছে যে অভিজ্ঞ চোখেও অনেক সময় তা ধরা কঠিন হয়ে উঠছে। আপনি যদি ভিডিওর জন্য ভালোভাবে প্রম্পট (নির্দেশনা) দেন তাহলে সেই ভিডিওর ক্যারেক্টার, তার চেহারার গঠন, কী পরে আছে, ভিডিওতে কতজন মানুষ আছে- তারা কোন ক্লাসের, তাদের হাতে কী আছে- তারা গুলশান না গ্রামে আছে এসবই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আর এসব করতে প্রয়োজন হয় না খুব একটা অভিজ্ঞতা কিংবা দামি ডিভাইস। আগে যেমন কোনো ভিডিও বানাতে দামি ডিভাইস লাগতো, সেখানে এখন এক স্মার্টফোনে দিয়েই বানানো যাচ্ছে এমন সব ভিডিও। খরচও হয় খুবই সামান্য। মাত্র হাজার দুয়েক টাকায় কেনা যায় হাজার ক্রেডিট, যা দিয়ে বানানো যায় ৫০টি ভিডিও। কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করলে বিনামূল্যেই এসব টুলসে এক্সেস করা যায়। ইন্সট্রাক্টর সাব্বির আহমেদ একই টুল দিয়ে একটি ভিডিও বানিয়ে দেখান। নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, বাঁশ মার্কা চাই, মগেরগঞ্জ এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমরা বাঁশ মার্কার পাশেই আছি।