
যৌন হয়রানির অভিযোগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের (বেরোবি) পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রশীদুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১৩তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ অনুসারে এই বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলীর নির্দেশক্রমে রোববার (০৩ আগস্ট) রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর রশিদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়, যা প্রকাশ করা হয় সোমবার (০৪ আগস্ট) বিকেল ৫টায়।
জানা গেছে, পরিসংখ্যান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগ এবং আরও ১৫ শিক্ষার্থীর মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটি যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর বরখাস্তের সুপারিশ করে। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের মার্ক টেম্পারিংয়ের অভিযোগেও তাকে দু’সপ্তাহ আগে পাঁচ বছরের জন্য বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, দ্রুত একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে অধ্যাপক রশীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। এর আগ পর্যন্ত তিনি বরখাস্ত অবস্থায় থাকবেন।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা এই সাময়িক বরখাস্তকে অপর্যাপ্ত বলে উল্লেখ করেছেন। পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “একজন প্রমাণিত যৌন নিপীড়কের শুধু সাময়িক বরখাস্ত কীভাবে যথেষ্ট হতে পারে? আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। এই ধরণের ঘটনায় প্রশাসনের দেরি ও নমনীয় অবস্থান আমাদের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগাচ্ছে।”
উল্লেখ্য, চার মাস আগে শুরু হওয়া অভিযোগের সূত্র ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একাধিকবার প্রশাসনের বিরুদ্ধে সময়ক্ষেপণ এবং বিচারপ্রক্রিয়ায় ধীরগতির অভিযোগ তোলেন। জুলাই মাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিভাগের শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে শাস্তির দাবিতে তালা দেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস দিলেও শাস্তির বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বরখাস্ত হওয়া অধ্যাপক রশীদুল ইসলামের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে….