০৫:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও দাবি

  • Miah Suleman
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:৫৬:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫
  • 85
গত বছরের এই দিনে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামে যারা স্বৈরাচারী শাসন টিকিয়ে রাখার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন, তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং তাঁদের পরিবার ও স্বজনদের প্রতি আন্তরিক সহমর্মিতা প্রকাশ করি।
রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট দেশীয় অস্ত্রধারী ও তাদের দোসরদের দ্বারা সংঘটিত সেই নৃশংস হামলায় বহু নিরীহ নাগরিক আহত হন; কেউ পঙ্গু, কেউ দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। তাঁদের সাহস, আত্মত্যাগ এবং দেশপ্রেম আমাদের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তাক্ত ইতিহাস জাতির স্মৃতিতে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। তাঁদের আত্মত্যাগকে অর্থবহ করতে হলে রাষ্ট্রের উচিত —
*শহীদ ও আহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান
*নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা
*ভবিষ্যতে এ ধরনের নৃশংসতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ
এই দায় রাষ্ট্রের কাছে পবিত্র এবং অপরিহার্য। গণতান্ত্রিক চেতনাকে সমুন্নত রাখতে এবং মানবাধিকারের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হলে এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা জরুরি।
৫ আগস্টের প্রেক্ষাপট: প্রতিফলন ও প্রত্যাশা
৫ আগস্ট তারিখটি নিছক একটি ক্যালেন্ডারের তারিখ নয়, এটি আমাদের ইতিহাসে সংযোজিত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক আবেগের সঙ্গে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও একাধিক চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে:
*অর্থনৈতিক সংকট: মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক ঋণ এবং কর্মসংস্থান সংকট জনজীবনে প্রভাব ফেলেছে।
*জলবায়ু ঝুঁকি: ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি ও নদীভাঙন আরও প্রকট হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে।
*আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট: কাশ্মীর পরিস্থিতি, ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বিশ্ব রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে, যার প্রভাব বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার ও অভিবাসী অর্থনীতিতেও পড়েছে।
দাবি ও করণীয়
এই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আমাদের জাতিগত ও রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রয়োজন আরও সচেতন ও অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও পূর্বাভাস-নির্ভর পদক্ষেপ। অর্থনৈতিক ন্যায্যতা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ। গণমানুষের মৌলিক অধিকার, বাক-স্বাধীনতা ও বিচারপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা।
৫ আগস্ট যেন শুধুমাত্র একটি তারিখ না হয়ে ওঠে—বরং হয়ে উঠুক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ও গণমানুষের স্বার্থ রক্ষার প্রতীক। এই হোক আমাদের সর্বসম্মত প্রত্যাশা।
আত্মত্যাগের যে আগুন ৫ আগস্টের প্রেক্ষাপটে জ্বলেছিল, তার আলোতেই জাগ্রত হোক আমাদের বিবেক, সাহস ও প্রত্যয়। দেশপ্রেম, গণতন্ত্র ও ন্যায়ের পথে আমরা যেন অবিচল থাকি — এটাই হোক আমাদের প্রণতি ও অঙ্গীকার।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

গাজার উপর ইসরায়েলের স্থল ও আকাশপথে একযোগে হামলা

জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও দাবি

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:৫৬:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫
গত বছরের এই দিনে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামে যারা স্বৈরাচারী শাসন টিকিয়ে রাখার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন, তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং তাঁদের পরিবার ও স্বজনদের প্রতি আন্তরিক সহমর্মিতা প্রকাশ করি।
রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট দেশীয় অস্ত্রধারী ও তাদের দোসরদের দ্বারা সংঘটিত সেই নৃশংস হামলায় বহু নিরীহ নাগরিক আহত হন; কেউ পঙ্গু, কেউ দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। তাঁদের সাহস, আত্মত্যাগ এবং দেশপ্রেম আমাদের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তাক্ত ইতিহাস জাতির স্মৃতিতে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। তাঁদের আত্মত্যাগকে অর্থবহ করতে হলে রাষ্ট্রের উচিত —
*শহীদ ও আহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান
*নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা
*ভবিষ্যতে এ ধরনের নৃশংসতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ
এই দায় রাষ্ট্রের কাছে পবিত্র এবং অপরিহার্য। গণতান্ত্রিক চেতনাকে সমুন্নত রাখতে এবং মানবাধিকারের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হলে এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা জরুরি।
৫ আগস্টের প্রেক্ষাপট: প্রতিফলন ও প্রত্যাশা
৫ আগস্ট তারিখটি নিছক একটি ক্যালেন্ডারের তারিখ নয়, এটি আমাদের ইতিহাসে সংযোজিত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক আবেগের সঙ্গে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও একাধিক চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে:
*অর্থনৈতিক সংকট: মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক ঋণ এবং কর্মসংস্থান সংকট জনজীবনে প্রভাব ফেলেছে।
*জলবায়ু ঝুঁকি: ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি ও নদীভাঙন আরও প্রকট হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে।
*আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট: কাশ্মীর পরিস্থিতি, ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বিশ্ব রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে, যার প্রভাব বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার ও অভিবাসী অর্থনীতিতেও পড়েছে।
দাবি ও করণীয়
এই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আমাদের জাতিগত ও রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রয়োজন আরও সচেতন ও অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও পূর্বাভাস-নির্ভর পদক্ষেপ। অর্থনৈতিক ন্যায্যতা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ। গণমানুষের মৌলিক অধিকার, বাক-স্বাধীনতা ও বিচারপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা।
৫ আগস্ট যেন শুধুমাত্র একটি তারিখ না হয়ে ওঠে—বরং হয়ে উঠুক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ও গণমানুষের স্বার্থ রক্ষার প্রতীক। এই হোক আমাদের সর্বসম্মত প্রত্যাশা।
আত্মত্যাগের যে আগুন ৫ আগস্টের প্রেক্ষাপটে জ্বলেছিল, তার আলোতেই জাগ্রত হোক আমাদের বিবেক, সাহস ও প্রত্যয়। দেশপ্রেম, গণতন্ত্র ও ন্যায়ের পথে আমরা যেন অবিচল থাকি — এটাই হোক আমাদের প্রণতি ও অঙ্গীকার।