
পঞ্চগড় সদর উপজেলার জগদল এলাকায় পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় পাঁচ যুবকের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে মিথ্যা মামলা দায়ের করে নিরপরাধ যুবকদের ফাঁসানো হয়েছে। মামলার অভিযোগে জানা যায়, ৪ জুন রাতে এক নারী তার অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে বোদা উপজেলার জেমজুট এলাকা থেকে পঞ্চগড় শহরে আসেন। বৃষ্টির কারণে আটকে যাওয়ার পর রাত সোয়া ১০টার দিকে জগদলের একটি অটোতে তিনমাইল এলাকায় পৌঁছান। অভিযোগ অনুযায়ী, সেখান থেকে এক আত্মীয়র ডাকে অটো থেকে নামলে কয়েকজন ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায় এবং ছেলেকে ভয় দেখিয়ে নালার ধারে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে এক ব্যক্তি পুলিশের জরুরি সেবায় ফোন করলে রাত একটার দিকে পুলিশ এসে মা-ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এই ঘটনায় ৫ জুন পঞ্চগড় সদর থানায় নারী নিজেই একটি গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় জনি ইসলাম, বিপ্লব হোসেন, মোকছেদুল ইসলাম, সাদেকুল ইসলামসহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়। পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। স্থানীয়রা দাবি করছেন, পুরো ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। জগদল এলাকার আইবুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ওই নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত ছিলেন। কিছুদিন আগে স্থানীয় যুবকরা তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে আপত্তি জানালে বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্য সালিশ বসে। সালিশে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন, বণিক সমিতির নেতা মোজাফফর হোসেন দুলু ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। সালিশে আইবুল ক্ষমা চান এবং স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করার প্রতিশ্রুতি দেন। মোজাফফর হোসেন দুলু বলেন, “আমি নিজেও সালিশে উপস্থিত ছিলাম। এর আগেও আইবুল এমন কর্মকাণ্ড করেছে। স্থানীয় যুবকরা প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের ফাঁসানো হয়েছে।” ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, “আইবুল ও ওই নারীকে অনৈতিক অবস্থায় ধরা হলে স্থানীয়ভাবে সালিশ হয়। আমরা তাকে বলেছিলাম, বাড়িতে থাকতে হলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকতে হবে।” আইবুল ইসলাম সাতমেরা সতরং পাড়া এলাকার মৃত আফিজ উদ্দিনের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। মুঠোফোনেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ হিল জামান বলেন, “ধর্ষণ মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটির সত্যতা উদ্ঘাটনে তদন্ত চলমান রয়েছে।” স্থানীয়দের দাবি, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে নিরপরাধদের মুক্তি এবং দোষীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।